প্রকাশিত: ১:৫৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৯, ২০২৫

মোঃ জয়নুল ইসলাম:

বিয়ানীবাজার উপজেলার লাউতা ইউনিয়নের টিকরপাড়া গ্রামের কবরস্থান থেকে আদালতের নির্দেশে দাফনের দুই মাস পাঁচ দিন পর পিতৃত্ব শনাক্তের জন্য দুইদিনের নবজাতক শিশুর লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সকাল ১১টায় সিলেটের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট তানজীব হোসাইন সজীব এবং বিয়ানীবাজার ও জুড়ি থানা পুলিশের উপস্থিতিতে য়াদালতের নির্দেশে কবর থেকে শিশুটির লাশ উত্তোলন করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিয়ানীবাজারের লাউতা ইউনিয়নের টিকরপাড়া গ্রামের সিএনজি অটোরিকশা চালক জসিম উদ্দিন তাঁর মেয়েকে গৃহস্থালির কাজের জন্য মৌলভীবাজার জেলার জুড়ি উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের এক গৃহস্থ্য বাড়িতে পাঠান। সেখানে স্থানীয় এলাকার মাহিন আহমেদ নামে এক যুবক রাজমিস্ত্রীর কাজ করতো। তার সাথে সখ্যতার সুত্র ধরে শারীরিক সম্পর্ক হয়, সেই সম্পর্কের ফলে গর্ভধারণ ও পরবর্তীতে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি ছেলে শিশুর জন্ম হয়। পরে উভয় পরিবারের সম্মতিতে টিকরপাড়া গ্রামের ভাওরাটুল গোরস্থানে শিশুটিকে দাফন করা হয়। কিন্তু এ ঘটনার পর থেকেই মাহিন আহমেদ বাচ্চা ও তার মাকে অস্বীকার করে। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী নারী ও তার স্বজনরা আদালতের শরনাপন্ন হলে আদালতের নির্দেশে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য শিশুটির মরদেহ উত্তোলন করে নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

ভুক্তভোগী মেয়ের বাবা জসিম উদ্দিন জানান, মেয়েকে জুড়ির ভবানিপুর এলাকার একটি বাড়িতে কাজের জন্য পাঠালে সেখানকার স্থানীয় যুবক মাহিনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক এবং এক পর্যায়ে তাদের শারীরিক সম্পর্কে স্থাপনে মেয়ের গর্ভে সন্তান চলে আসে। পরবর্তীতে আমি জুড়ি থানায় একটি নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করি। পরে সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ছেলের পরিবার সাথে বিষয়টি সমঝোতায় শেষ করতে চাইলে আমিও রাজি হয়ে আপোষ করে ফেলি। আমার মেয়ের গর্ভের ছেলে সন্তানটি ভূমিষ্ট জওয়ার দুইদিন পর মারা যায় এবং উভয় পরিবারের সম্মতিতে মেয়ের নবজাতক ছেলেকে আমার এলাকার কবরস্থানে দাফন করি। কিন্তু মেয়ের সন্তানকে দাফন শেষ করার পর থেকে মেয়েকে গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায় ছেলে ও তার পরিবার। এরপর আমি আদালতের দ্বারস্থ্য হলে আদালত পিতৃপরিচয় শনাক্তে ডিএনও পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করতে দুই মাস পর কবর থেকে লাশ উত্তোলনের জন্য ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দেন।

জসিম উদ্দিন জানান, আমি একজন হতদরিদ্র। সিএনজি অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। তবে আমি আমার মেয়ের প্রাপ্য সম্মানটুকু ফেরত চাই। এতটুকুই চাওয়া আমার মহামান্য আদালতের নিকট। আশা করছি, আমরা ন্যায়বিচার পাবো।

লাশ উত্তোলন শেষে সিলেটের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট তানজীর হোসাইন সজীব জানান, আদালতের নির্দেশক্রমে দুই মাস আগে মারা যাওয়া দুইদিনের একজন নবজাতক শিশুর লাশ উত্তোলন করেছি। মূলত ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আমরা নমুনা সংগ্রহ করেছি।

বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ আশরাফউজ্জামান বলেন, জুড়ী থানার একটি মামলায় আদালতের নির্দেশে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে একজন শিশুর লাশ উত্তোলন করা হয়, আমরা জুড়ী থানাকে সহযোগীতা করেছি।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Live TV