সিলেট ২৮শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১:৩৬ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৬, ২০২০
কানাইঘাট প্রতিনিধিঃ সিলেটের কানাইঘাট লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপির কালিনগর আগফৌদ গ্রামে শ^াসরুদ্ধ করে ফাতেমা বেগম (৩০) নামে গৃহবধূ হত্যার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর থেকে স্বামী মরম আলী পলাতক রয়েছে। গত বৃস্পতিবার রাত ১১টার পর যেকোন সময়ে এ হত্যাকান্ডটি সংঘটিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ শামসুদ্দোহা পিপিএম। এ হত্যাকান্ডের সাথে ফাতেমা বেগমের স্বামী মহরম আলী (২৭) ছাড়াও আরো কেউ জড়িত রয়েছে কিনা এবং কি কারনে ফাতেমাকে হত্যা করা হয়েছে তা তদন্ত করে বের করা হবে বলে জানা ওসি। হত্যাকান্ডের খবর পেয়ে গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে কানাইঘাট সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল করিম ও থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম ঘটনাস্থলে যান কিন্তু তারা লাশ উদ্ধার করেনি। একপর্যায়ে বিকাল ২টার দিকে ফাতেমা হত্যাকান্ডের আলামত সংগ্রহ করার জন্য পুলিশের অধিকতর অপরাধ (সিআইডি) ক্রাইম সিন ইউনিটের সিলেটের একটি দল ঘটনাস্থলে এসে ফাতেমার লাশের প্রাথমিক সুরতহাল রির্পোট তৈরী সহ বেশ কিছু আলামত জব্দ করেন। ক্রাইম সিন দলের পাশাপাশি থানা পুলিশও পৃথক সুরতহাল রির্পোট তৈরী করে তার লাশ উদ্ধার করে সিলেট ওমেক হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে।
থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, একটি পাকা ঘরের মেঝেতে ফাতেমা বেগমের মৃত দেহ পাওয়া যায় এবং মেঝেতে জমাট বাধা রক্তের দাগও ঘরের বিছানা সহ আসবাব পত্র এলোমেলো ভাবে পাওয়া যায়। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাতেমা বেগমকে তার স্বামী মহরম আলী গলা কেটে হত্যা করেছে বলে প্রচার করা হচ্ছে তা একেবারে সত্য নয়। কোন কিছু সঠিকভাবে জানার আগে গুজব ছড়ানো হয়। তিনি বলেন ফাতেমা বেগমের ডান চোখের নিচে এবং বাম চোখের পাশে এবং গলায় নখের আচাড় সহ আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার মুখ ও কান দিয়ে রক্ত বের হয়েছিল। ধারনা করা হচ্ছে ফাতেমা বেগমকে শ^াসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারনা করছে পুলিশ। তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর কিভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে তার কারন জানা যাবে বলে ওসি শামসুদ্দোহা জানান।
এদিকে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গেলে স্থানীয় লোকজন জানান, কালীনগর আগফৌদ গ্রামের আব্দুল খালিকের মেয়ে ফাতেমা বেগমের সাথে একই গ্রামের জলাল উদ্দিনের পুত্র মামাতো ভাই ট্র্যাক্টর চালক মরম আলীর বিয়ে বছর খানেক পূর্বে হয়। বিয়ের পর থেকে শ^শুড়বাড়িতে আলাদা একটি পাকা ঘরে স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করত মরম আলী। বিয়ের পর থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়াঝাটি লেগে থাকতো, অনেকবার সামাজিক ভাবে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া মিমাংসা করা হয় বলে সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল খালিক সহ আরো অনেকে জানান। ফাতেমা বেগমের মা জলিকা বেগমও বলেন তার মেয়ের সাথে স্বামীর ঝগড়া সব-সময় লেগেই থাকতো। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে তারা ঘুমিয়ে যান। পরদিন শুক্রবার সকাল বেলা মরম আলীর বাড়ির কয়েকজন মহিলা আমার বাড়িতে এসে বলেন, আমার মেয়ে ফাতেমা নাকি অসুস্থ। একপর্যায়ে তাদের বসত ঘরের দরজায় এসে ডাকাডাকি করলে আমার মেয়ে ফাতেমা ও তার স্বামীর কোন সাড়া-শব্দ না পেয়ে দরজায় ধাক্কা দিলে দরজা খুলে যায় এবং ঘরের মেঝেতে আমার মেয়ের রক্তাক্ত লাশ দেখতে পাই, কিন্তু তার স্বামীকে ঘরে দেখা যায়নি। স্ত্রীকে খুন করার পর থেকে মরম আলী পলাতক রয়েছে। তবে পুলিশ মরম আলীকে আটক করার জন্য বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে। এলাকার আরো অনেকে বলছেন মামাতো ভাই মরম আলীর সাথে বিয়ে হওয়ার পূর্বে ফাতেমা বেগমের অন্যত্র একটি বিয়ে হয়েছিল। সেই ঘরে ফাতেমার ছেলে সন্তান রয়েছে জানা গেছে। এ ঘটনায় থানায় নিহতের মা জলিকা বেগম বাদী হয়ে মেয়ের জামাই মরম আলীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ- মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান (ডালিম)
মোবাঃ- 01712-174796
বার্তা সম্পাদকঃ- জাকারিয়া হোসেন জোসেফ
মোবাঃ- 01744-420000
ইমেইলঃ- dailysylheterdinrat24@gmail.com
২২৯ এক্সেল টাওয়ার ২য় তলা সুবিদ বাজার, সিলেট।
Design and developed by M-W-D